Dhaka Saturday, April 20, 2024


ডাক্তার দেখাতে গিয়ে লাপাত্তা হাজী সেলিম,ফিরেন সন্ধ্যায়!


Published:
2020-10-27 09:24:58 BdST

Update:
2024-04-20 08:18:08 BdST

পুরান ঢাকার দেবীদাস ঘাট লেনে হাজী মোহাম্মদ সেলিমের বাড়িতে সোমবার র‍্যাবের অভিযানের সময় যারা জড়ো হয়েছিলেন তাদের সবার মুখে ছিল একটাই প্রশ্ন- হাজী সেলিম কই?

নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় ইরফান সেলিমকে সোমবার আটকের পরই পুরান ঢাকার দেবীদাস ঘাট লেনে হাজী মোহাম্মদ সেলিমের বাড়িতে অভিযান শুরু করে র‍্যাব।

অভিযান শুরুর পর হাজী সেলিমের নয় তলা ভবন ‘চাঁন সরদার দাদাবাড়ি’র আশপাশের কয়েকটি রাস্তায় যান চলাচল সীমিত করে দেয় র‍্যাব। তবে বাধা উপেক্ষা করে অসংখ্য উৎসুক মানুষ জড়ো হয় ভবনের সামনে।

বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শুরু হওয়া অভিযান চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা দক্ষিণের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইরফান ও তার দেহরক্ষী জাহিদুল ইসলামকে নিয়ে ভবনটি থেকে বেরিয়ে আসেন র‍্যাব কর্মকর্তারা।

সোমবার দিনভর আলোচনায় ছিল র‍্যাবের এই অভিযান। তবে কোথাও দেখা মেলেনি হাজী সেলিমের।

দেবীদাস ঘাট লেনে যারা জড়ো হয়েছিলেন তাদের সবার মুখে ছিল একটাই প্রশ্ন- হাজী সেলিম কই?

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অভিযান শুরুর কয়েক মিনিট আগে স্ত্রীকে নিয়ে ভবন থেকে বেরিয়ে যান হাজী সেলিম। এরপর সারাদিনেও তার দেখা পাওয়া যায়নি। বেশ কয়েকবার তার মোবাইল ফোনে ফোন দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইরফান ও তার দেহরক্ষী জাহিদুলকে র‍্যাব সদস্যরা নিয়ে যাওয়ার পরপরই বাস ভবনে ফেরেন হাজী সেলিমের স্ত্রী, বড় ছেলেসহ স্বজনরা। এসময় তাদের অনেককে কাঁদতে দেখা যায়।

আরও পড়ুন: হাজী সেলিমপুত্র দেহরক্ষীসহ কারাগারে

র‍্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থল ছাড়ার পরপরই গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে ‘খারাপ আচরণ করতে থাকেন’ সাংসদের সমর্থক ও বাড়ির কেয়ারটেকাররা।

নিউজবাংলার ফটোসাংবাদিক সেখান থেকে কিছু ছবি অফিসে পাঠাতে চাইলে একজন বলে ওঠেন ‘বহুত তাফালিং করছেন। এবার যান। না হলে খারাপি দেখবেন।’

হাজী সেলিম কোথায় জানতে চাইলে কতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সফিউল্লাহ সফি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না।’

একই সুরে কথা বলেন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ আলমগীর। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে উনি কোথায় আছেন আমি জানি না। ওনার পিএসকে ফোন দেন, উনি বলতে পারবেন।’

এরপর যোগাযোগ করা হয় হাজী সেলিমের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মোহাম্মদ সোহেল ও বেলাল হোসেনের সঙ্গে। এদের মধ্যে সোহেল সংযোগ কেটে দেন; বেলাল সাড়া দেননি।

এর আগে অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, হাজী সেলিমের অবস্থান সম্পর্কে তাদেরও ধারণা নেই।

এ প্রসঙ্গে আশিক বিল্লাহ  বলেন, ‘আমরা অভিযানে গিয়ে তাদেরকে পাইনি। শুনেছি তারা স্বামী-স্ত্রী ডাক্তারের কাছে গেছেন।’

রোববার সন্ধ্যায় ধানমন্ডির কলাবাগান সিগন্যাল সংলগ্ন রাস্তায় হাজী সেলিমের গাড়ির আরোহীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ। এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।

এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় করা মামলার আসামিরা হলেন হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম, তার সহযোগী এবি সিদ্দিক দিপু, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ও মিজানুর রহমান। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুই-তিন জনকে আসামি করা হয়েছে।

হাজী মোহাম্মদ সেলিম বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন ১৯৯৬ সালে। সে বছরই জাতীয় নির্বাচনে এই এলাকা থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এই নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আবুল হাসনাতকে হারান তিনি।

তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে হাজী সেলিম হেরে যান বিএনপি প্রার্থী নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর কাছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি তিনি।

আরও পড়ুন: এই ব্রিফকেস, ওয়াকিটকি কোথায় পেলেন সেলিমপুত্র

২০১৪ সালের নির্বাচনেও দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। এরপর তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়েন এবং নৌকার প্রার্থী মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে হারান।

সর্বশেষ ২০১৮ সালে আবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ঢাকা-৭ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীকে হারান হাজী সেলিম।



Topic:


Leave your comment here:


Most Popular News
Top