ঢাকা-৫ আসনে উপ-নির্বাচনে আ. লীগের নতুন নেতৃত্বের লড়াই ব্যানার ফেস্টুন
ব্যানার ফেস্টুন থাকলেও, দেশের দু:সময় জনগনের পাশে নেই তারা !
Published:
2020-08-20 08:42:14 BdST
Update:
2024-12-13 14:36:07 BdST
ঢাকা-৫ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে পোস্টার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এ নির্বাচনি এলাকার রাস্তা-ঘাট, উল্লেখযোগ্য মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা ছেয়ে গেছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ‘শুভেচ্ছা বার্তা’ আর সমর্থকদের ‘...ভাইকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চাই’ পোস্টারে।
এর পাশাপাশি সমানতালে যে-যার জায়গা থেকে চালিয়ে যাচ্ছেন তদবির-লবিং। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রার্থী হতে চেয়ে প্রচারণা শুরু হয়েছে এ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার প্রয়াণের দিন থেকেই।
আর এদিকে, ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টারে বিভিন্ন মানবিক মুখরোচক ডায়লগ লেখা থাকলেও বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালীন সময়ে দুস্থ -অসহায় মানুষের পাশে দুই একজন প্রার্থী ব্যাতীত তেমন কাউকে দেখা যায়নি ।
আবার কাউকে যোগ্যতার কাতারে দেখানো হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় হিসেবে , এনিয়ে দলীয় ত্যাগী- নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। এসম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, দলের দু:সময় জীবনবাজি রেখে কাজ করে মাঠে ত্যাগী নেতা কর্মীরা, আর হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে দলীয় মনোনয়ন চাওয়াটা দলের জন্য শুভ লক্ষণ নয় । আমি চাই দলের জন্য যারা ডেডিকেট, তারাই যেন মনোনয়ন পায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালীন সময়েও নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকা-৫ আসনের প্রতিটি পাড়া-মহল্লা পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। একই সঙ্গে বড় বড় রাস্তা থেকে শুরু করে অলিগলিসহ সব স্থান পোস্টারের দখলে। আর এর বাইরে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজ নিজ পছন্দের সম্ভাব্য নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণা-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন সমর্থকরা।
ঢাকা-৫ নির্বাচনি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এই আসনে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রয়াত হাবিবুর রহমান মোল্লার বড় ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজল মনোনয়ন চেয়ে পোস্টার লাগিয়েছেন বিভিন্ন স্থানে। সাঁটিয়েছেন ব্যানারও। জাতির জনক ও কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবির পাশাপাশি তার ছবি এসব পোস্টার-ব্যানারে। এই প্রার্থীকে বড় বড় রাস্তা থেকে শুরু করে অলিগলিসহ সব স্থান পোস্টারের দখলে থাকলেও বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালীন সময় তাকে কোন মানবিক কাজে দেখা যায়নি।তার বড় যোগ্যতা হিসেবে দেখানো হয়েছে বাবা ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রয়াত হাবিবুর রহমান মোল্লাকে। এর বাহিরে আর কোন গুনাবলি বা যোগ্যতা নেই বলে মনে করেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
এ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশিদ মুন্না। তার কর্মী ও সমর্থকরা ঢাকা-৫ আসনের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার টাঙিয়েছেন। তারা পোস্টারে লিখেছেন, ‘ঢাকা-৫ আসনে হারুনর রশিদ মুন্না ভাইকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাই।’ তাকেও জাতির জনক ও কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবির পাশাপাশি এসব পোস্টার-ব্যানারে সীমাবদ্ধ রয়েছেন,বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালীন সময়ে দুস্থ অসহায় মানুষের পাশে দাড়াতে দেখা যায়নি।
ঢাকা-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহানগর দক্ষিণের সভাপতি। তার পক্ষে মনোনয়ন চেয়ে ঢাকা-৫ আসনের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানায় পোস্টার টাঙিয়েছেন কর্মী-সমর্থকরা। ‘কামরুল হাসান রিপন ভালো লোক/ঢাকা-৫ উপনির্বাচনে জয়ের মালা তারই হোক’ শীর্ষক ব্যানার-ফেস্টুনেও ছেয়ে আছে এই এলাকার রাজপথ।
এদিকে, বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ কামালের স্ত্রী ক্রীড়াবিদ সুলতানা কামালের ছোট ভাইয়ের মেয়ে পরিচয় দিয়ে এলাকার অলিগলিসহ বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার টানিয়ে মাঠে আলোচনায়, কথিত আওয়ামী লীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য নেহরীন মোস্তফা দিশি। ইতোমধ্যে তার কর্মী-সমর্থকরা পোস্টার-ব্যানার সাঁটিয়ে লিখেছেন, ‘ঢাকা-৫ আসনে মাতুয়াইলের কৃতী সন্তান নেহরীন মোস্তফা দিশি আপাকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই।’ নেহরীন মোস্তফা দিশির যোগ্যতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় ও পোষ্টারে সীমাবদ্ধ । বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালীন সময় তাকে কোন উল্লেখযোগ্য মানবিক বা সমাজ সেবামূলক কর্মকান্ডে দেখা যায়নি। এজন্য ঢাকা -৫ আসনের জনগনের কাছে ইতিমধ্যে তিনি ফেষ্টুন দিশি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুর ইসলাম মনু ঢাকা-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান ভাইকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাই।’ তাকেও জাতির জনক ও কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবির পাশাপাশি এসব পোস্টার-ব্যানারে সীমাবদ্ধ রয়েছেন,বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালীন সময়ে দুস্থ অসহায় মানুষের পাশে দাড়াতে দেখা যায়নি।তিনি বয়স্কজনিতরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বলে জানা যায়, ঢাকা ৫- আসনের নেতাকর্মীরা মনে করেন কাজী মনিরুর ইসলাম মনু যদি মনোনয়ন পায়, তাহলে ওনি স্ব-শরীরে কোন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। এক্ষেতে তরুণ এবং দলের জন্য ত্যাগী নেতাই পছন্দ এই এলাকার সাধারণ জনগনের।।
আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চান হাজী আব্দুল লতিফ ভূঁইয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সভাপতি ও যাত্রাবাড়ীর আর কে চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রাকিব ভূঁইয়া। ইতোমধ্যে ঢাকা-৫ নির্বাচনি এলাকার অলিগলি ছাড়িয়ে রাজপথের দুইধারে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে তার সমর্থকদের সাঁটানো নির্বাচনি পোস্টার। এছাড়া ঢাকা-৫ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খান মাসুদ। মাসুদের কর্মী-সমর্থকরা তার মনোনয়ন চেয়ে ঢাকা-৫ আসনে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার টানিয়ে লিখেছেন, ‘ঢাকা-৫ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খান মাসুদ ভাইকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই।’
প্রসঙ্গত, গত ৬ মে ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান মোল্লার প্রয়াণে এ নির্বাচনি আসনটি খালি হয়।
Topic:
Leave your comment here: